শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

খেলনা

সেলিম মায়ের সাথে প্রতিদিনি আসে এবাড়িতে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়েই চলে আসে। মা ওকে ড্রয়িং রুমের কার্পেটের উপর বসিয়ে রেখে কাজ শুরু করে। অনুমতি ছাড়া ও যেতে পারে না কোথাও।
মা কাজ করে, ও বসে বসে দেখে। সকালে এসেই পুরো বাড়িটা ঝাড়ু দেয় তারপর চলে যায় রান্নাঘরে। রান্না-বান্না হলে সবার জন্য খাবার টেবিলে বেড়ে দেয়। সবাই যারযার মতন খেতে থাকে আর মা এবাড়ির বাচ্চাটা যে কিনা সেলিমের সমবয়সী তাকে খাইয়ে দেয়।
খাওয়া শেষ হলে ছেলেটাকে স্কুলের জন্য পোশাক পরিয়ে তৈরি করে দেয়। তারপর একে একে সবাই যখন চলে যায় তখন মা ওকে নিয়ে খেতে বসে রান্নাঘরে। খাওয়া শেষ করে মা শুরু করে বাড়ির আসবাবপত্র ঝাড়পোছের কাজ। ও বসে থাকে কার্পেটের উপর, কোথাও যাওয়ার অনুমতি নেই।
মাঝে মাঝে এবাড়ির গুরুগম্ভীর লোকটা দুপুরের আগেই বাড়ি চলে আসে তখন মা আগেভাগেই রান্না চাপিয়ে দেন। লোকটাকে দেখলেই ভয় লাগে। ওকে ভয় দেখাতেই যেন আজকেও দুপুরের আগেই চলে এসেছে।

এরকম সময় ও চাইলে বাড়িটা ঘুরে দেখতে পারে কিন্তু তা ও করবে না। ও চলে যাবে বাচ্চাটার রুমে। ওখানে অনেক খেলনা - বল, পুতুল, বন্দুক, গাড়ি আরও কত কি। ওঘর থেকে মায়ের হাসির আওয়াজ ভেসে আসছে। এখন এমন কোন খেলনা দিয়ে খেলা যাবে না যেটা শব্দ করে, তাহলে মা টের পেয়ে যাবে। নতুন নতুন খেলনা দিয়ে খেলতে দারুণ ভালো লাগে ওর। পুরনো বা নষ্ট হয়ে গেলে অবশ্য ওকে দিয়ে দেয় খেলনাগুলো কিন্তু তখন ওগুলো দিয়ে খেলতে অতটা ভালো লাগে না। বাবা থাকলে হয়তো ওকে দুয়েকটা নতুন খেলনা কিনে দিত। বাবাযে কোথায় চলে গেছে...
খেলনাগুলোয় হাত বুলাতে বুলাতেই অনেকটা সময় চলে গেল, ওকে এবার ড্রয়িং রুমে চলে যেতে হবে। পাশের রুমে মা আর ঐ লোকটার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন