সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ফুল

ও বুদ্ধিটা বের করেছে গত বছর। তাই কয়েকদিন আগে থেকেই তক্কে তক্কে ছিল। ফুল জোগাড় করবে বলে। খুব কঠিন হলো না কাজটা। কাছাকাছি একটা বাসা আছে, তার মালিকটা খুব ভালো। মাসে এক-দু বার ওকে দিয়ে বাসার সামনের অংশ আর বাগানটা পরিষ্কার করায়। যেদিন কাজটা করে দেয় সেদিন পেট ভরে খাওয়ায় আবার কটা টাকাও দেয়। টাকাটা পেলে ওর বেশ ভালোই হয়। ওর আর সেদিন কাগজ-প্লাস্টিকের বোতল এসব কুঁড়াতে হয় না। খেলেই সারাটা দিন কাটিয়ে দেয়। সেই বাসার মালিককে বলে ও কটা ফুল চেয়ে নিল। রাতে এগুলো নিয়েই যাবে।

রাত সাড়ে দশটা। ও দাঁড়িয়ে আছে শহীদমিনারে ঢোকার গেইটের উল্টো দিকে। কয়েকটা ফুল নিয়ে। আজ এগুলো বেচতে পারলে কালকের দিনটা একটু আরামে কাটবে। খেলার জন্য অনেকটা সময় পাবে।

হঠাৎ একটা পুলিশ ওকে দেখে খেঁকিয়ে উঠল - 'অই ফকিন্নির বাচ্চা এইখানে কি করস, যা এইহান থাইকা'। ও বুঝতে পারলো এখানে থাকা যাবে না, পুলিশ গরীবদের পছন্দ করে না আর ফুলগুলো বেচতে হলেও গেইটের কাছে যাওয়া দরকার। তাই রাস্তার উল্টো দিকে গেইটটা লক্ষ করে দৌড় লাগাল।

গাড়িটা জোর ব্রেক কষেও থামতে পারল না। গরীব বাচ্চাটা চাপা পড়ল দামী টায়ারের তলায়। হাত থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ল ফুলের তোড়া সাথে একটু খেলতে যাবার ইচ্ছে।

মাইকে গান বাজতে শুরু করল - আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন