শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

এবারের ঈদ

অন্য সব ঈদের মত এবারো টিকিটের দাম ছিল বেশি, গরুর দামটাও বেশ চড়াই গেছে। যদিও ভারতের কেউ কেউ বলেছিল গরু দেবেনা আমাদের কিন্তু শেষ অব্দি এলো। যদিও এবার কোন বড় ধরণের যানবাহন দুর্ঘটনার খবর আমাদের শুনতে হয়নি কিন্তু মক্কা আর মিনা’র ঘটনা আমাদের স্থির থাকতে দেয়নি। আর ঈদে চুরি-ছিন্তাই, সড়ক দুর্ঘটনা, দরিদ্রের ঈদ সবই প্রায় আগের মতোই আছে আথবা কিছুটা বেড়েছে।
(বড় করে দেখার জন্য ছবির উপর ক্লিক করুন)

ঈদে গরুর দাম (গুগল করে পেলাম)

মক্কা দুর্ঘটনা (গুগল করে পেলাম)

মিনা’র দুর্ঘটনা (গুগল করে পেলাম)
এই পোস্টটি করার আগে পর্যন্ত প্রথম
আলোতে সর্বাধিক পঠিত খবর

এই পোস্টটি করার আগে পর্যন্ত বিডি
নিউজে সর্বাধিক পঠিত খবর

এই অবস্থায় কেমন আর থাকা যায়?

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আমার আর ঘরে ফেরা হল না

ঝগড়া হচ্ছিলো বাবার সাথে।

বাবা আমায় বলছিলেন- ভগবান এতো নিষ্ঠুর নয়, শেষ পাতে দোই মিষ্টি ঠিকি দেবেন।
আমি বলেছিলাম- লাথি খেতে খেতে যে খাবার আমি খাই তা হয় কেঁড়ে নেওয়া নাহয় করুণার। লাথির পরে বালের দোই মিষ্টি আমার দরকার নেই।
জীবনে ঐ প্রথম ও শেষ বারের মত এমন একটি শব্দ আমি বাবার সামনে উচ্চারণ করলাম যা উচ্চারণ করার পরেই আমি বুঝতে পারলাম আমি বাবার সামনে আমার নিজেরও অবাধ্য হয়ে গেছি অনেকখানি। আমি আর থাকতে পারলাম না। বেরিয়ে গেলাম বাড়ি থেকে। রাত তখন প্রায় একটা। হাঁটতে শুরু করলাম। রাস্তা প্রায় মানুষ শূন্য। টুকটাক মানুষ, গাড়ি আর কুকুরের দেখা পাচ্ছি। আমি হাঁটতে থাকলাম।

রেলস্টেশনেও মানুষ প্রায় নেই। যারা আছে তারাও হয় গুটিসুটি মেরে বসে আছে নয় শুয়ে আছে। আমিও বসে পড়লাম চায়ের এক দোকানে। দোকানের লোকটি আমার দিকে একবার দেখল, আমি অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে নিলাম। সেও আর কিছু বলল না। বসে আছি চুপচাপ।

ভোর হয়ে এসেছে, এমন সময় একটা ট্রেন এলো। দুটো টিউশনির বেতন পেয়েছি, পকেটে পর্যাপ্ত টাকা ছিল তাই উঠে পরলাম। ট্রেনটি যখন তার শেষ গন্তব্যে পৌঁছুল তখন সকাল আটটা। স্টেশনে নেমেই বুঝতে পারলাম এ এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী শহর। স্টেশন থেকে বেড়িয়ে আমিও হাঁটতে লাগলাম হাজারো উচ্চাকাঙ্ক্ষীদের ভিড়ে। টানা তিন দিন আমি হেঁটে বেড়ালাম শহরটিতে। ক্ষুধা পেলে হোটেল আর ঘুম পেলে গেস্ট হাউজে চলে যেতাম। এই তিনটা দিন আমি কিছুই প্রায় দেখিনি। শুধু ভেবেছি – আমি ঠিক কি চাই যার জন্যে নিজের অবাধ্য হতেও দ্বিধা করি না। আমার কি কিছুই পাওয়ার নেই। আমি যা চাই তা কি অন্যায্য। আমার অধিকারের গণ্ডী কতটুকু। আমি কোন উত্তর তখন খুঁজে পাইনি। তবে এটুকু বুঝেছিলাম, পালিয়ে যাওয়া কোন সমাধান নয়। তাই স্টেশনে গেলাম।

রাত প্রায় একটা। আমি ফিরে এলাম আমার চেনা সেই ছোট্ট শহরে। ফিরছিলাম বাড়ির পথে। বাড়ির কাছাকাছি এসে কেমন একটা অস্বস্তি হতে লাগলো। ঢুকলাম বাড়িতে।
শুনলাম, তিন দিন আগের সে রাতেই বাবা স্ট্রোক করেন। মারাগেছেন আজ সকালে। বাবা নেই।
একটা প্রচণ্ড চাপ বুকের মধ্যে নিয়ে ঘরে ঢুকলাম। আমার ভাইটা চুপচাপ বসে আছে এককোণে। মা’র চোখে চোখ পড়ল। আমি বুঝতে পারলাম আমার প্রতি মা’র যে ভালবাসা ছিল তার অনেকখানিই এখন ঘৃণার চাঁদরে ঢেকে গেছে। দরজায় ধরে আমি দাঁড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। তারপর ধীরে ধীরে বেড়িয়ে এলাম বাইরে। ঘরের সবাই দেখল কিন্তু কিছু বলল না।

ভাবছি এবার সত্যিই চলে যাবো। আর কেন ঘরে ফেরা…

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

মিসেস মনাদা

১)
আমরা আড়ালে মনাদা কে মিসেস মনাদা বলি, তাকে নিয়ে হাসাহাসিও করি অনেক।তবে মনাদা মানুষ ভালো, সাদাসিধে। আসল নাম মনোজ বিশ্বাস।
মনাদাকে মিসেস মনাদা বলার পেছনে একটা ঘটনা আছে। ঘটনাটা অবশ্য সে নিজেই আমদের বলেছে।
মনাদা বিয়ে করে প্রেম করে।বৌদির নাম মালতী রানি চক্রবর্তী।তা ব্রাহ্মণ হওয়ার কারণেই কিনা কে জানে, বৌদি তার নামের লেজটুকু কিছুতেই পরিবর্তন করবে না।মনাদাও তেমন জোড় দেয়নি। হাজার হোক একমাত্র বৌ বলে কথা।কিন্তু কে জানতো যে, এর ফলটা ঠিক কি হবে?
একদিন কুরিয়ার সার্ভিস থেকে লোক এলো।দরজার বেল চাপতেই কাজের মেয়ে সখিনা বেড়িয়ে এলো।
‘কাকে চাই?’ সখিনার প্রশ্ন।
‘মালতী রানি চক্রবর্তীর একটা কুরিয়ার আছে।’ – দরজায় দারান কুরিয়ারের লোকটি বলল।
‘উনি তো বাড়িতে নেই।’
‘তাহলে মিঃ চক্রবর্তীকে দেকে দিন।’ – লোকটি বলল।
‘মিঃ চক্রবর্তী!’ – সখিনা অবাক।
‘কেন? উনিও নেই বুঝি?’
সখিনা কি বলবে ঠিক বুঝতে পারলো না, ‘আচ্ছা আপনি দাঁড়ান আমি আসছি’ – এই বলে হুড়মুড় করে ভেতরে ছুটল।
সখিনা কোনরকমে মনাদার ঘড়ে ঢুকেই হড়বড় করে বলল – ‘কুরিয়ারের লোক এসেছে, মিঃ চক্রবর্তীকে খুঁজছে।’
‘কি!’ – মনাদা বিস্মিত।


২)
একটা উদীয়মান রাগ নিয়ে মনাদা দরজায় এসে দাঁড়াল।‘বলুন’ গম্ভীরভাবে কুরিয়ারের লোকটিকে বলল।
‘আপনি মিঃ চক্রবর্তী তো, মিসেস চক্রবর্তীর একটা কুরিয়ার আছে। একটা স্বাক্ষর দিয়ে রেখেদিন।’ কুরিয়ারের লোকটি প্রফেশনাল প্লাস্টিক হাসি হেসে বলল।
‘আমি মিঃ চক্রবর্তী নোই।’ – মনাদা গম্ভীর।
‘ও উনিও নেই?’
‘আছে, না নেই।’ – মনাদা কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না।
‘আছে আবার নেই, মানে আমি ঠিক…’
‘এ বাড়িতে কোন মিঃ চক্রবর্তী নেই।’ – মনাদার সাফ কথা।
‘তাহলে আপনিই রেখে দিন, উনি যখন নেই।’
‘আছে।’
‘আছে? আপনিই তো বললেন নেই।’ – কুরিয়ারের লোকটি এবার বিরক্তই হচ্ছে।
‘দেখুন, আপনি যাকে খুঁজছেন সে আমিই কিন্তু আমি মিঃ চক্রবর্তী নোই।’ – মনাদা দাঁত কিড়মিড় করে বলল।
‘জী?’ – লোকটি আবারো অবাক।
‘জী।’ – মনাদার উত্তর।
‘আচ্ছা মিসেস চক্রবর্তীর সাথে আপনার সম্পর্কটা ঠিক কি বলবেন?’
‘উনি আমার স্ত্রী।’
‘উনি আপনার স্ত্রী কিন্তু আপনি মিঃ চক্রবর্তী নন…’ – লোকটি হিসাব মিলাতে পারছে না।
‘জী না, আমি মিঃ বিশ্বাস।’
‘ও তাহলে কি নামের পদবিটা ভুল লিখেছে?’
‘না ওটা ঠিকই আছে।’
‘কিন্তু…’
‘দেখুন, উনি উনার বাবার লেজটাই এখনো ধরে আছেন।’
‘মানে?’ – কিছুই বুঝতে পারলনা লোকটা।
‘মানে, উনি বাবার পদবিটাই ব্যবহার করেন।’ – মনাদা আবারও গম্ভীর।
‘ও…. এতক্ষণে বুঝলাম।’ – আবার প্লাস্টিক হাসি হাসল লোকটা।

বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

মিশ্রণের যাত্রা শুরু

প্রশ্ন করা যেতেই পারে, কেন মিশ্রণ? উত্তর খুব জটিল নয়; আমরা যারা আমজনতা আছি তারা বসবাস করি একটা ভালো-মন্দের মিশ্রণের মধ্যে, আমাদের আদর্শে মিশ্রণ, চালচলনে মিশ্রণ, ভাষায় মিশ্রণ, ভাবনায় মিশ্রণ; মোট কথা আমরা বেঁচেই আছি একটা মিশ্রণের মধ্যে। আর এসকল মিশ্রণকে আম জনতার ভাষায় টুকে রাখতেই মিশ্রণ। আবার ভেবে বসবেন না যে এখানে টনকে টন ওজনের প্রবন্ধ লেখা হবে, নির্ভয়ে থাকতে পারেন এখানে ওসব হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আর হ্যাঁ, যদি আপনি খুব জ্ঞান পিপাসু পাঠক হন তাহলে নিশ্চিত থাকতে পারেন 'মিশ্রণ' আপনাকে হতাশ করবে। কারণ জ্ঞান বিতরণ করতে হলে তা থাকা চাই! এও ভাবার কোন অবকাশ নেই যে ভালো-মন্দ নিশিয়ে একটা ককটেল আপনাকে গেলানোর বন্দবস্ত এখানে করা হবে। তবে ভুল তো হতেই পারে, হলে শুধরে দেবেন।