সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০১৬

মিশ্রণ - ৩

১) নাসিকার অন্দরমহলে পানির প্রবাহ মোটেও সুখকর বিষয় নয়। কিন্তু কি আর করা? ভদ্র সমাজে চলতে গেলে তো আর নাকে টিস্যু গুজে রাখা যায় না তাই একের পর এক টিস্যু ঘষে ফেলছি আর টিস্যু কোম্পানির ব্যাবসার উন্নতি করছি।
শরীরটা ভালো নেই দু'দিন ধরে। কতগুলো রোগ যে একসাথে ধরেছে কি বলব। ফর্মালিন খেয়ে খেয়ে বোধয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জ্যামিতিক হারে কমতে শুরু করেছে। অফিস থেকে যে ছুটি নিয়ে কদিন রেস্ট নেবো তার তো জো নেই, তাই বাড়িতে মাকেই জ্বালাচ্ছি - এটা খাবো না ওটা খাবো, এরকম ভাবে না ওরকম ভাবে রাঁধো; আহা, রান্না সম্পর্কে যে আমার কত জ্ঞান! মা - বাবা আছে বলেই হয়তো এখনও আছি নইলে কবেই শেয়েল কুকুরে টেনে নিয়ে যেত।  

২) ভাষাহীনতা বলতে বোধয় কিছু হয় না, সবকিছুরি নিজস্ব একটা ভাষা আছে। যেমন ধরুন কিটারোর যন্ত্রসঙ্গীত। কি বলবেন এই যন্ত্রের ভাষাকে? আমার মতে 'মনের ভাষা' বলা উচিত, যাকে কোন অক্ষরে বাঁধা যায় না; শুধুই অনুভূতি।

কিটারো সম্পর্কে ইমন জুবায়ের ভাই তার ব্লগে চমৎকার একটা পোস্ট করেছিলেন, পড়ে দেখতে পারেন

৩) সারারাত ঘুম হয়নি, এপাশ-ওপাশ করছিলাম বিছানায়। শেষমেশ না পেরে উঠে পরলাম। ঘড়িতে তখন ছ'টা। শরীরটাও ভালো নেই যে বাইরে থেকে ঘুরে আসবো। ঠিক করলাম সিনেমা দেখবো। এতে যদি মনোযোগটা একটু খারাপলাগা থেকে সরে।
বসে গেলাম দেখতে - The Book Thief. কিছুক্ষণ দেখার পর শরীর খারাপের বিষয়টা আর অনুভবি করছিলাম না!
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির এক পরিবার লিসেল নামের এক মেয়েকে দত্তক নেয়। অন্য বাচ্চাদের থেকে ওঁ একটু আলাদা। ওঁ পড়তে ভালোবাসে। একদিন এক ইহুদী যুবক আসে তাদের বাড়িতে আশ্রয় নিতে। যুবকটি থাকতে শুরু করে তাদের বেজমেন্টে। এই যুবক অসুস্থ হলে লিসেল তাকে বই পড়ে শোনায়। বই সে কোথায় পায়? নাৎসিরা তো অনেক বই পুড়িয়েদিয়েছে। সে বই চুরি করে এক ধনাঢ্য পরিবারের লাইব্রেরী থেকে। যখনই কাছাকাছি কোথাও যুদ্ধ শুরু হয় তখন মহল্লার অনেকে মিলে লুকিয়ে পরে এক বিল্ডিঙের নিচে। সেখনে সে সবাইকে গল্প শোনায়, ভালোবাসার গল্প।
একসময় যুদ্ধ থেমে গেল। এরমধ্যেই সে হারিয়েছে অনেককিছু, অনেক প্রিয়জন। কিন্তু থেমে থাকেনা কিশোরী লিসেলের জীবন। জীবন শুধুই দুঃখময় নয়, সুখ, ভালোবাসা আর আশাও আছে। তার কোন এক আশার পূর্ণতা দিতেই হয়তো একদিন হঠাৎ সামনে এসে হাজির হয় বেজমেন্টে লুকিয়ে থাকা সেই পুরনো বন্ধুটির সঙ্গে।

বুধবার, ৬ জুলাই, ২০১৬

মিশ্রণ - ২

১) গত ঈদের আগের ঈদে, সকাল সকাল দরজায় ঠক-ঠক, কার না মেজাজ খারাপ হবে। কি আর করা, উথে গিয়ে দরজা খুললাম, দেখি পাঁচ-ছয় বছরের একটা ছেলে দরজায় দাড়িয়ে। মেজাজটা তখন আর খারাপ হয়ে নেই। ছেলেটা ভাত চাইলো। বুকের ভেতর একটা মোচড় দিয়ে উঠেছিলো। জিজ্ঞেস করে জানা গেল - ষ্টেশনে থাকে, বাবা নেই, সাথে থাকে মা আর ছোট বোন।
এরকম মানুষের সংখ্যা দেশে কম নয় যাদের ঈদের দিনেও ভাতের ক্ষুধা থাকে। নিজের জীবনের কষ্ট তো আছেই সেই সাথে এসকল মানুষের কষ্ট, কিছুতেই কোনটার কিনারা করা যাচ্ছে না; এটাই কি জীবন?
জাভেদ আক্তারের 'তো জিন্দা হো তুম' কবিতাটার কথা মনে পড়লো...

জীবন কি? সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার জন্যে কঠিন, আমি শুধু জানি আমি বেঁচে আছি আর তাই আমার জায়গা থেকে আমি কিছু করতে চাই, মানুষের জন্যে।

২) আসার কথা ছিল, এসে গেল; ঈদ। একটা কথা অনেককেই বলতে শুনি, ঈদে আর আগের মত আনন্দ পাই না; আমারও একই মত। কিন্তু কেন? হয়তো আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের দুঃখবোধ অতোটা গভীর ছিল না, তাই আনন্দটা দারুণ উপভোগ করতাম; পরিবেশও একটা কারন হতে পারে, এখন পরিবেশ আর আগের মত আনন্দদায়ক না।কারন যাই হোক, দিন বদলের জন্য আমাদের অবশ্যই নিজেদের বদলাতে হবে।

৩) এই লেখাটা লেখার মাঝখানে দুবার লোডশেডিং হল, বিদ্যুৎ নিয়ে তেমন একটা চিন্তা অবশ্য এখন না করলেও চলে কারন সুন্দরবন উজাড় করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সব ঠিক হয়ে যাবে, নাকি বলেন?

৪) গত দুদিন থেকে থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে, আজ নেই তবে মুখ ভোতা করে আছে আকাশ। এরকম দিনে গরমের বিরক্তি থেকে রেহাই পাওয়া যায় ঠিকই কিন্তু আকাশ দেখে সুখ পাওয়া যায় না।ছোটবেলায় একবার দেখেছিলাম, ঈদের সারাটা দিন বৃষ্টি হয়েছিল। কে মানে বৃষ্টির বাঁধা, ছাতা নিয়ে সব দল বেধে বেরিয়ে পরে ছিলাম। দু-একজনের কাঁদায় পরে যাওয়াটাও তো স্বাভাবিক ছিল, পরলও। তারপর আর কি, ভ্যা ভ্যা কান্না আর বড়দের হাসাহাসি। না হেসে উপায় কি, কাঁদায় পরার পর চেহারাটা হয় দেখবার মত!
এই ঈদেও যদি সারাদিন বৃষ্টি হয়, তবে?

৫) ঈদ বিশেষ করে রমজানের ঈদ নিয়ে অনেক ভালো ভালো গান হয়েছে কিন্তু নজরুলের সেই গানের মত আর হয় না...



মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১৬

মিশ্রণ - ১

১) খারাপ খবরটাই আজকাল খবরে পরিনত হয়েছে। যাদের কাছ থেকে আশ্বাস পাচ্ছি তাদের বেশিরভাগের উপরেই আমাদের বিশ্বাস নেই। দেশে নির্ভরযোগ্য মিডিয়া নেই বললেই চলে, নির্ভরতার জন্য আমাদের ঘাটতে হচ্ছে বাইরের মিডিয়াগুলো। নিয়মিত আতঙ্কিত এই পৃথিবীতে তবুও আমরা আশায় বুক বাঁধি। তাই নিচিকেতার সাথে সুর মেলাতে চাই...

যাইহোক আমাদের জীবন থেমে থাকবে না কোনোমতেই। শোক সুখ নিয়েই জীবন, জীবনকে বয়ে নিয়ে চলাই জীবন।

২) আমার এক মামা আছেন যিনি বেশ সাহসি আর রাগি। সাবাই তাকে বেশ সমঝে চলে। সবকিছুতেই তার একটা ডেমকেয়ার অবস্থান আছে শুধু বজ্রপাত ছাড়া, বজ্রপাত হলেই তিনি কেমন বদলে যান। দিশেহারা হয়ে যান, দৌড়ে ঘরের মধ্যে চলে এসে গুটিসুটি মেরে বসে থাকেন। আমার অবস্থা তার থেকে কিছুতা ভালো। আমি দিশেহারা হই না তবে ভয় লাগে খুব। তাই অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম এই বিষয়ে কিছু পড়াশোনা করবো, আজ সুযোগ পেয়ে করে ফেললাম।

বজ্রপাত কি এবং এর কারন জানতে এই লেখাটি পড়ুন অথবা এটি অথবা এটি আর বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায় জানতে এই লেখাটি পড়ুন। আপনার কি কোন ধারনা আছে এই মুহূর্তে পৃথিবীর কোথায় কোথায় বজ্রপাত হচ্ছে, আমার ধারনা আপনার জানা নেই; জানতে হলে এই ওয়েবসাইটটি দেখুন
খুঁজতে খুঁজতে আরও একটা জিনিস পেয়ে গেলাম, কি করে Cloud Light বানাবেন...

৩) আমি অনেকটা নিজের অজান্তেই বাংলা অনুবাদের দুনিয়ায় প্রবেশ করেফেলি, সেবা প্রকাশনীর পাঠক হিসেবে। অনুবাদের এই দুনিয়ার সাথে আমার পরিচয় না হলে আমার জীবনটা হতো আরও খানিকটা বৈচিত্র্যহীন, কল্পনাগুলো হতো আরও অনেক রংহীন। এতো বললাম বাংলা অনুবাদের কথা, এবার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড অনুবাদের কথায় আসি। আচ্ছা আপনার কি কোন ধারনা আছে যে আজ অব্দি পৃথিবীতে কাদের লেখা বেশি অনুবাদ করা হয়েছে।না জানা থাকলে জেনে নিন এখান থেকে

অনুবাদের বিষয়টা না থাকলে পৃথিবী সম্পর্কে জানার জায়গাটা আরও অনেক সীমিত হয়ে যেত আমার মত আরও অনেকের। তাই অনুবাদের মাধ্যমে জানার পৃথিবীটাকে প্রসারিত করে দেওয়ায় পৃথিবীর সকল অনুবাদককে শ্রদ্ধা জানাই। 

৪) ভেজ-ননভেজের (আমিষ-নিরামিষ) কথা উঠলেই অনেকে ভারতকে একটা উদাহরণ হিসেবে টেনে নিয়ে আসেন। এবং এতা বুঝানোর চেষ্টা করেন যে ভারতের বেশিরভাগ মানুষই ভেজিটেরিয়ান যদিও বাস্তবতা ভিন্ন। সম্প্রতি The Huffington Post এবিষয়ে একটা আর্টিকেল প্রকাশ করেছে। নিচের ছবিটি উক্ত আর্টিকেল থেকেই নেওয়া হয়েছে... 

৫) একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কাছেই আমার বাসা। যারফলে প্রচুর মেস আমার বাসার আশেপাশে। সবসময় মানুষ গমগম করে এলাকায়, অথচ ঈদের ছুটিতে? একেবারে উল্টো, খারাপই লাগে খাঁ খাঁ করা পরিবেশে। গতকাল তাই এই নিয়ে দুকলম কাব্যি করে ফেললাম -
আছি 
বহু মেসবাড়ির কাছাকাছি 
থরে থরে ঘর তাতে 
থরে থরে বাতি 
বিদ্যুৎ আছে তবুও 
লোডশেডিঙেই আছি!