মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০১৪

অতুলের গল্প(৫) ~ জয়ন্ত ব্রহ্ম

বর্তমান সময়ে……
আজ বিশেষ একটা দিন অতুলের জন্য । বাবা তাকে ঘরে বন্ধ করে রাখলেও তাতে আজ আর তার কোন আপত্তি নেই । মাকে সে ফিরে পেয়েছে নিজের কাছে । বাবাকে একবার বলেও ছিলো ও । কিন্তু বাবা বিশ্বাস করেননি তার কথায়, কেবল দুঃক্ষি চোখ নিয়ে তাকিয়ে ছিলেন তার দিকে । শেষে ছেলের চরম পরিনতির কথা চিন্তা করে রিহ্যাব সেন্টারেও দিয়েছিলেন কিন্তু লাভ হয়নি । অতুল জানতো তাকে পালাতেই হতো নইলে আবার সে তার মাকে হারাবে চিরদিনের জন্য । তবে এ জন্য আজ আর তার বাবার উপর তার কোন রাগ নেই কারন আজও তাকে  মা দেখা দেবেন । আজ যে করেই হোক তাকে নেশা করতেই হবে । গত পরশু মা তাকে বলেছিলেন অনেক আদর হলো এবার তাকে কোথায় যেনো তার সাথে যেতে হবে । যাতে আজীবন সে তার মার সাথে থাকতে পারে তাকে যেন আর এই নরক যন্ত্রনা ভোগ করতে না হয় । গত মাসের শেষের দিকে বাবার আলমারি থেকে টাকা চুরি করে তিন পাতা সেই জাদুর ট্যাবলেট কিনেছিলো অতুল । তারই শেষ একটা আজ সে সেবন করলো ধোঁওয়া বানিয়ে । অন্যান্য দিনের মত আজও চারদিক পাল্টে গেলো । মা এলেন মুখে তার ভুবন জুড়ানো হাসি নিয়ে কিন্তু কাছে এলেন না । দুর থেকে দুই হাত বাড়িয়ে অতুলকে কাছে ডাকলেন । অতুল যেনো উড়ে চলে গেলো তার মার বাড়ানো দুই হাতের দিকে মুখে হাসি আর দুচোখে কান্না নিয়ে । এ কান্না কষ্টের নয় বরং চরম সুখের । আজ আর সে কিছুতেই তার মাকে যেতে দেবে না । বুকের সাথে জাপটে ধরে রাখবে তার মাকে চিরজীবনের জন্য   


পরিশেষে.......
তুমুল বর্ষণ শুরু হয়েছে আজ, বৃষ্টি যেন আজ সমস্ত কিছু ধুঁয়ে মুছে সাফ করে দেবে।প্রবল বর্ষণ মাথায় নিয়ে ছাতা হাতে ঐ প্রেম নিবেদনরত ছেলেটি দাড়িয়ে আছে আজো। তার অন্য হাতে ধরা গোলাপের তোড়াটি বার বার এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে পাগলা বাতাস। তবু সে অপেক্ষায় আছে মেয়েটির ফেরার আশায়। মেয়েটি আজও তাকে পাশ কাটালো চোখে বিদ্রুপাত্তক দৃষ্টি নিয়ে। বিমর্ষ নয়ন নিয়ে ছেলেটি হয়তো চলেই যেতো কিন্তু একটা জিনিষ তাকে রাস্তায় আঠার মত আটকে দিলো। রাস্তার পাশের আটতলা বাড়ির ছাত থেকে একটি ছেলে দৌড়ে এসে ঝাপিয়ে পড়তে যাচ্ছে। সেই ছেলেটি যে প্রতিদিন ছাত থেকে তার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতো। চিৎকার করে বলতে চাইলো কিছু কিন্তু বলা আর হলো না, ছেলেটি আটতলার ছাত থেকে লাফ দিয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন