Posts

আফ্রিকা থেকে ভারতে আসার গল্প

Image
[এই লেখায় সকল জায়গার নাম বর্তমান সময়ের মানচিত্র অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়েছে যেন বুঝতে সুবিধা হয়। আর আফ্রিকা থেকে ভারতবর্ষ আসার (বাব-এল-মান্দেব প্রণালী পেড়িয়ে) অংশটুকুই শুধু বর্ণনা করা হয়েছে (মানচিত্রে Mota নামের যায়গার কাছাকাছি নীল ডটেড লাইনটি দেখুন)। ] ৩,০০,০০০ বছর আগেও আধুনিক মানুষ (হোমো সেপিয়েন্স) পৃথিবীতে বসবাস করতো। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে আফ্রিকার মরক্কোতে। আর আফ্রিকার বাইরে আধুনিক মানুষের থাকার সবচেয়ে পুরনো যে প্রমাণটি (১,৮০,০০০ বছর আগের) পাওয়া গেছে সেটি হোল ইজরাইলে। তবে তারা বেঁচে থাকতে পেরেছিল কি না সেটি নিশ্চিত করে বলা যায় না। আধুনিক মানুষের আফ্রিকা থেকে বেড়িয়ে এসে সফল ভাবে টিকে থাকার যে প্রমাণ আমরা পাই তা ৭০,০০০ বছর আগের। তারা আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া হয়ে জিবুতির (এটিও আফ্রিকার দেশ) উপর দিয়ে এসে পৌছায় লোহিত সাগরের পাড়ে। সেখান থেকে বাব-এল-মান্দেব প্রণালী পেরিয়ে পৌছায় ইয়েমেনে। তারপর সৌদি আরব, ওমান, কাতার, ইরান হয়ে পৌছায় আফগানিস্থানে। সব শেষে পাকিস্তান। এই পুরো যাত্রাটি কিন্তু অল্প সময়ে সম্পন্ন হয়নি; হয়েছিলো ৫০,০০০ বছরে। আর এমনও ভাবার কোন কারণ নেই যে আমি শুধু নির্দিষ্ট একটি দলকেই ব

কে

বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। ঝুম বৃষ্টি না। তারচেয়ে একটু কম। মাঝারি বর্ষণ বলা যেতে পারে। বিছানায় শুয়ে বৃষ্টির শব্দ শুনছি। একবার মনে হোলো জানালাটা খুলে বৃষ্টি দেখি কিন্তু পর মুহূর্তেই চিন্তাটা বাদ দিয়ে দিলাম। কারণ জানালা খুললেই ঘরে মশা ঢুকবে। আর মশা ঢুকলেই কয়েল ধরাতে হবে। এখন কয়েল ধরাতে ইচ্ছে করছে না। তাই চুপচাপ শুয়েই থাকলাম। আমার পরিবার বলতে আমি আর আম্মা। এখন আম্মা নেই। খালার বাড়িতে গেছেন। ফিরতে সন্ধ্যে হবে। হঠাৎ দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দ হলো। অবাক হয়ে ভাবলাম - আম্মা এত তাড়াতাড়ি এসেগেছেন! এক ঘণ্টাও তো হয়নি। খালার বাড়িতে যেতে আসতেই তো এক ঘণ্টার বেশি লাগার কথা। নাকি যায়নি কোন কারনে। এসব ভাবতে ভাবতে আবার দরজায় টোকা পড়ল। বিছানা ছেড়ে দরজার কাছে গেলাম। দরজাটা খুলতে যাব এমন সময় বাইরে থেকে হাঁক দিয়ে উঠল - আম্মা দরজা খোলো, এতক্ষণ লাগে... চমকে উঠলাম। আরে এটা তো আমার গলা!

রম্য লেখার চেষ্টা

রম্য লেখার সিরাম চেষ্টা করেও যখন কিছু হয় না। তখন নিজেকে চিপে ভেতর থেকে রস বের করা ছাড়া তো আর কিছু করার থাকে না। নিচের লেখাগুলো তারই প্রকাশ। সাম্প্রতিক সময়ে এগুলো আমার ফেসবুকে স্থান পেয়েছে আর লাইক-কমেন্টের অভাবে ফেসবুক ফেটে চৌচির হওয়ার যোগাড় হয়েছে! (১) সালমান খানরে একবার প্রশ্ন করা হয় - রাতে যখন ঘুম আসে না, বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করেন তখন তিনি কি চিন্তা করেন। তিনি উত্তরে বলেন যে তার নাকি বিছানায় ঘুম আসে না তাই কাউচের উপড়ে ঘুমান। আমারও রাতে ঘুম আসে না কিন্তু ডাক্তারের নির্দেশ ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। তাই ভালাম সালমান খান টেকনিকটা আপ্লাই করে দেখি। কিন্তু কাউচ কোই পাবো। আমার ছাপরায় তো কাউচ নাই। তাই একটা বুদ্ধি বাইর করলাম। তিনটা চেয়ার এক যায়গায় কইরা তার উপড়ে তোষকটা চাপায়া সাইডে দুইটা বালিশ দিয়া একখান ফলস কাউচ বানাইলাম। শুয়া দেখি দারুণ ফিলিংস। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ঘুম আইসা পড়ল😴 স্বপ্ন দেখলাম - আমি সালমান খানের বাড়িতে কাউচের উপড়ে ঘুমায়া আছি এমন সময় সালমান খান আইসা উপস্থিত। সে আমার দিকে একটা পিস্তল তাক কইরা বলল - তোর সইল্লে এত্তুডি ছ্যাদা করুম যে কনফিউজড হয়া যাবি, শ্বাস কোন দিক দিয়া নিবি আর... ধড়ফ

স্বপ্ন

এক তখনো এদেশে লকডাউন শুরু হয়নি। রাতে খেয়েদেয়ে সাড়ে নয়টার মধ্যে বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম। গন্তব্য - রেজা ভাইয়ের বাসা। গিয়ে দেখি ভদ্রলোক ছাদের উপর একটা পাটির উপর চিত হয়ে শুয়ে উদাস ভাবে সিগারেট টানছেন আর আকাশের দিকে ধোঁয়া ছাড়ছেন। আমার দিকে না তাকিয়েই বললেন - এসো লেখক।  আমি গিয়ে তার পাশে বসলাম। জিজ্ঞেস করলাম - কি করে বুঝলেন যে আমি? তিনি এবারো আমার দিকে না তাকিয়ে উত্তর দিলেন - পায়ের শব্দ। মনে মনে ভাবলাম লোকটা কত অদ্ভুত। একটা দোতলা বাড়ির ছাদের উপর পিচ্চি পিচ্চি দুটো ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন। গাদা গাদা বইপত্র, ম্যাগাজিন আর কাগজত্রে ঠাসা দুটো ঘর। একটা ল্যাপটপ আছে। আমি নিশ্চিত ওর মধ্যে বিনোদনমূলক কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। ছাদের উপর অন্তত ত্রিশ প্রজাতির ক্যাকটাস দিয়ে একটা বাগান করেছেন। মাঝে মধ্যে এসব ছেড়ে কিছুদিনের জন্য হাওয়া হয়ে যান। এই হাওয়া হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাই অবশ্য তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। তিনি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরেন গল্পের খোঁজে। সেসব গল্প কখনো হয় রহস্যময়, কখনো অদ্ভুত, কখনো ভয়ংকর আবার কখনো বা সুযোগ করে দেয় মাথা খাটানোর। এই যে পৃথিবী জুড়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে তুমি কি ত

সাগরে আলাপ

Image
- কিরে ঘটনা কি? - কি জানি। কিছুই তো বুঝতে পারছি না। - কাল শুনলাম নৌকায় দুই লোক কি সব আক্রমণ নিয়ে কথা বলছিল। কিসের জেন আক্রমণ হয়েছে। - বলিস কি! - হ্যাঁ। কিন্তু কিসের যে আক্রমণ সেটা ঠিক বুঝতে পারলাম না। - তীরে মানুষের সংখ্যা নামমাত্র। জাহাজ-নৌকা সবই একেবারে কমে গেছে। কি হচ্ছে কিছুই তো বুঝতে পারছি না। - যা হচ্ছে ভালোই হচ্ছে। - একথা কেন বলছিস? - কারণ এই যে আমরা তীরের এত কাছে ঘুরে বেরাচ্ছি এটা কিন্তু ছয়-সাত পুরুষ আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কোনদিন ভেবেছিলি এত কাছ থেকে ডাঙা দেখতে পারবি? - তা যা বলেছিস। পৃথিবী যেন আমাদের পাওনা অধিকার ফিরিয়ে দিচ্ছে। [বঙ্গোপসাগরে দুই ডলফিনের মধ্যে কথা হচ্ছিল] 

বলবো না

তখন সবে হাই স্কুলে পা দিয়েছি। শীতের মধ্যে সকাল সকাল লেপের নিচ থেকে উঠতে কি যে কষ্ট হতো। হাতমুখ ধোয়ার জন্যে পুকুরের সামনে দাঁড়াতেই মনে হতো ঝেড়ে একটা দৌড় দিয়ে আবার লেপের মধ্যে গিয়ে ঢুকি। অবশ্য মায়ের রুদ্রমূর্তিটা মনে পড়ত বলে তেমনটা করা হতো না কখনোই। গরম ভাতের সাথে কোন দিন বর্তা, কোন দিন ভাঁজি অথবা ডাল এই দিয়ে খেয়েদেয়ে তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়তাম স্কুলের জন্যে। ঈদগার কাছাকাছি এসে সবার সাথেই দেখা হতো। তারপর পাখির মত দল বেঁধে আনন্দগুলো ভাগাভাগি করে কাটিয়ে দিতাম সারাটা দিন। এটাই যেন নিয়ম হয়ে গিয়েছিল আমাদের। কিন্তু নিয়ম তো ভাঙার জন্যেই। একদিন সকালের কথা। ঘুম ভাংতেই দেখি মা বাবার মাথার কাছে কপালে হাত দিয়ে বসে কাঁদছে। বাবা শুয়ে আছে। মাঝে মাঝে কোকীয়ে উঠছে, ব্যথায়। তখন হাঁটুগুলো অনেকটা ভাজ করে উপরে নিয়ে আসছে, কুচকে ফেলছে চোখ, দু’হাত দিয়ে খামছে ধরছে পেট। আমি বুঝতে পারলাম ব্যথাটা পেটে। ধীরে ধীরে বাবা কিছুটা শান্ত হয়ে এলো। মা উঠে গেল পাশের ঘরে। আমি পাশেই বসে ছিলাম। হঠাৎ বাবা বালিশ থেকে মাথাটা একটু তুলে বলল – ‘গায়ে কোথাও পচন ধরলে কেমন লাগে জানিস?’ আমি এমন প্রশ্ন কোনদিন শুনিনি। জিজ্ঞেস করলাম – ‘কেমন লা

মানব ইতিহাসে ছাগলের অবদান!

ছাগল। মাংস, দুধ, চামড়া, বাচ্চা-কাচ্চা সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে উপকার করছে আমাদের। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। মানব ইতিহাসে এক বিশাল অবদান রেখেছে এই ছাগল! ৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ। কালদি নামের ইথিওপিয়ার এক ছাগল পালক, প্রতিদিনের মতো সেদিনও গিয়েছেন ছাগল চরাতে। ছাগলগুলোকে চরতে দিয়ে সে চলে গেছে আরাম করতে। দুপুরের দিকে ঘুমিয়েও পরেছিল একটু। বিকেলে জেগে উঠে আবার বাঁশিতে ফুঁ। এবারে সেই সুর, যা সে প্রতিদিনই বাজায় ছাগলের পালকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য। এই সুর শুনেই ছাগলগুলো তার কাছে ফিরে আসে এবং বাড়ির পথ ধরে। কিন্তু সেদিন ছাগলগুলো এলোনা। চিন্তিত হয়ে পড়ল কালদি। খুঁজতে শুরু করল। একটুক্ষণ খুঁজেই পেয়েগেল ছাগলগুলো। কিন্তু সমস্যা হল, ব্যপক লাফালাফি শুরু করেছে ছাগলগুলো। দেখে বুঝারও উপায় নেই যে দিনভর এগুলো পুরো ভূমিতে চরেবেড়িয়েছে। আজ এদের যেন কোন ক্লান্তিই নেই! ব্যপারটা বুঝার চেষ্টা করল কালদি। খেয়াল করল, ছাগলগুলো ইথিওপিয়ার ঝোপ থেকে এক ধরণের ছোট ছোট লাল ফল খাচ্ছে আর তুমুল উৎসাহে লাফালাফি করে যাচ্ছে। কৌতূহলী হয়ে উঠলো কালদি। দু’তিনটা ফল হাতে তুলে নিল, ঘুড়িয়েফিরিয়ে দেখল। মুখে পুরে দিল। খেয়ে নিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যপক