রসের খোঁজে

আমি কষালো। তাই একটা রম্য বই খুঁজছিলাম, খুঁজতে খুঁজতে শেষমেশ হাঁপিয়ে উঠলাম। শহরের কোথাও জুতসই একটা রম্যের বই পাওয়া গেলো না। রম্যের বই নেই, পত্রিকায় রম্যের লেখা নেই যা আছে তার অধিকাংশই যাতা, টিভিতে রম্যের নামে ভাঁড়ামির ছড়াছড়ি। সব মিলিয়ে রসবোধ প্রায় উঠে যাবার যোগাড়। রসের নামে যা বিকচ্ছে তার অধিকাংশই রগরগে।

একটু রসের জন্যে আমি হাপিত্তেশ করে মরছি। চাকরির নামে মাসমজুরি করছি, আড্ডা দেই ফ্রাস্টেশনের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে, বেঁচে থাকার জন্য খাই, শরীর ক্লান্ত হলে ঘুমাতে যাই। ব্যস এই হচ্ছে আমার জীবন। যাতে শুধু কষ আর কষ। কষালো জীবন! তাই কিছুটা রসালো করতেই রম্যের খোঁজ।

আমার মতোই জীবনের স্বাদ না পেয়ে এক কাঠুরে একবার কাঠ কাটতে কাটতে হঠাৎ আনমনে বলে উঠলো - 'যমরাজ কি আমায় চোখে দেখে না'। তার কিছুক্ষণ পর যখন সে তার কাঠগুলো মাথায় করে নিয়ে বাড়ীর দিকে রওনা হচ্ছে হঠাৎ যমরাজ এসে হাজির। 'আমি তোমার প্রাণ নিতে এসেছি' - যমরাজ বলল। কাঠুরে ভয় পেয়ে গেলেও বুদ্ধির সাথে প্রশ্ন করল - 'কেন'। যমরাজ অবাক! 'তুমিই তো কিছুক্ষণ আগে বললে যে আমি তোমায় চোখে দেখি না'। কাঠুরে জবাব দিলো - 'হ্যাঁ বলেছিলাম, কিন্তু তা তো আমার প্রাণ নেওয়ার জন্য নয়, ভারি কাঠগুলো বাড়ী পর্যন্ত দিয়ে আসার জন্য'।  

কে মরতে চায় এই অস্বর্গ-অনরক পৃথিবীতে, তাইতো রসের খোঁজ।

Comments

Popular posts from this blog

সরস্বতী কথন

সাগরে আলাপ

কে