মিশ্রণ - ২

১) গত ঈদের আগের ঈদে, সকাল সকাল দরজায় ঠক-ঠক, কার না মেজাজ খারাপ হবে। কি আর করা, উথে গিয়ে দরজা খুললাম, দেখি পাঁচ-ছয় বছরের একটা ছেলে দরজায় দাড়িয়ে। মেজাজটা তখন আর খারাপ হয়ে নেই। ছেলেটা ভাত চাইলো। বুকের ভেতর একটা মোচড় দিয়ে উঠেছিলো। জিজ্ঞেস করে জানা গেল - ষ্টেশনে থাকে, বাবা নেই, সাথে থাকে মা আর ছোট বোন।
এরকম মানুষের সংখ্যা দেশে কম নয় যাদের ঈদের দিনেও ভাতের ক্ষুধা থাকে। নিজের জীবনের কষ্ট তো আছেই সেই সাথে এসকল মানুষের কষ্ট, কিছুতেই কোনটার কিনারা করা যাচ্ছে না; এটাই কি জীবন?
জাভেদ আক্তারের 'তো জিন্দা হো তুম' কবিতাটার কথা মনে পড়লো...

জীবন কি? সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার জন্যে কঠিন, আমি শুধু জানি আমি বেঁচে আছি আর তাই আমার জায়গা থেকে আমি কিছু করতে চাই, মানুষের জন্যে।

২) আসার কথা ছিল, এসে গেল; ঈদ। একটা কথা অনেককেই বলতে শুনি, ঈদে আর আগের মত আনন্দ পাই না; আমারও একই মত। কিন্তু কেন? হয়তো আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের দুঃখবোধ অতোটা গভীর ছিল না, তাই আনন্দটা দারুণ উপভোগ করতাম; পরিবেশও একটা কারন হতে পারে, এখন পরিবেশ আর আগের মত আনন্দদায়ক না।কারন যাই হোক, দিন বদলের জন্য আমাদের অবশ্যই নিজেদের বদলাতে হবে।

৩) এই লেখাটা লেখার মাঝখানে দুবার লোডশেডিং হল, বিদ্যুৎ নিয়ে তেমন একটা চিন্তা অবশ্য এখন না করলেও চলে কারন সুন্দরবন উজাড় করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সব ঠিক হয়ে যাবে, নাকি বলেন?

৪) গত দুদিন থেকে থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে, আজ নেই তবে মুখ ভোতা করে আছে আকাশ। এরকম দিনে গরমের বিরক্তি থেকে রেহাই পাওয়া যায় ঠিকই কিন্তু আকাশ দেখে সুখ পাওয়া যায় না।ছোটবেলায় একবার দেখেছিলাম, ঈদের সারাটা দিন বৃষ্টি হয়েছিল। কে মানে বৃষ্টির বাঁধা, ছাতা নিয়ে সব দল বেধে বেরিয়ে পরে ছিলাম। দু-একজনের কাঁদায় পরে যাওয়াটাও তো স্বাভাবিক ছিল, পরলও। তারপর আর কি, ভ্যা ভ্যা কান্না আর বড়দের হাসাহাসি। না হেসে উপায় কি, কাঁদায় পরার পর চেহারাটা হয় দেখবার মত!
এই ঈদেও যদি সারাদিন বৃষ্টি হয়, তবে?

৫) ঈদ বিশেষ করে রমজানের ঈদ নিয়ে অনেক ভালো ভালো গান হয়েছে কিন্তু নজরুলের সেই গানের মত আর হয় না...




Comments

Popular posts from this blog

সরস্বতী কথন

সাগরে আলাপ

কে